সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ , ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাছ বাজারে প্রতারণার ফাঁদে ক্রেতারা বালুপাথর মহালের ইজারা বন্ধ নয়, ইজারা প্রথার বাতিল চাই ১১ মাসে অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, ৫ পর্যটককে কারাদন্ড মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালিত “মধ্যনগরে রাজহংস হাউজ বোট বিএনপি নেতার দখলে” শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ কাদাজলে নষ্ট ভাটির বন্দরের সুনাম সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার চোরাকারবারিদের কোনো ছাড় নয় : বিজিবি অধিনায়ক টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র : অবহেলায় ধ্বংসের পথে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদারবাজারে সুপেয় পানি ও শৌচাগার সংকট ‘৩১ দফা’ বাস্তবায়নে বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ শান্তিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা আবারও ছাতক সীমান্তে ২০ জনকে পুশইন পৌর শহরে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের আহ্বান গাঁজার চালানসহ মাদক কারবারি হেলাল আটক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার, বন্দুক, পাইপগান, গুলিসহ গ্রেফতার ৪ শান্তিগঞ্জে সিএনজি ও প্রাইভেট কার সংঘর্ষে আহত ৫

পথে যেতে যেতে: পথচারী

  • আপলোড সময় : ০৬-০৫-২০২৫ ০৭:১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৫-২০২৫ ০৭:১৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
পথে যেতে যেতে: পথচারী
১ মে ছিল শ্রমিক দিবস। এই দিন সরকারি ছুটি। সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে এই দিনে সাধারণ ছুটি পালন করা হয়ে থাকে। কলে কারখানায় কাজ বন্ধ রাখে শ্রমিকরা। তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করলেও তার সঠিক মজুরি পায় না। এটি তাদের উপর এক অবিচার।
এমন এক সময় ছিল যখন শ্রমিকরা ১৮ ঘণ্টাই কাজ করতো কোনো বিরতি ছাড়াই। তাই শ্রমজীবী মানুষ দিনে দিনে তাদের অধিকার বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠে। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে এভাবে মালিকরা শোষণ করতো সাধারণ শ্রমিকদের। ১৮৮১ খ্রি. ‘আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার’ এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রকার কর্মসূচি দেয়। কিন্তু মালিক পক্ষ এতে কর্ণপাত করে না। শ্রমিকরা তাই বিভিন্ন দাবিতে নতুন নতুন কর্মসূচি পেশ করে। দিনে দিনে শ্রমিকদের এই দাবির প্রতি সমর্থন বাড়তে থাকে।

এক পর্যায়ে ১৮৮৬ সালের ১ মে এক বিশাল জমায়েতের ডাক দেয় শ্রমিকরা। এই জমায়েত কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ। এতে বেশকিছু শ্রমিক পুলিশের গুলিতে আহত হয়। তাই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের আনাচে-কানাচে। সচেতন হয় বিশ্বের শ্রমিক সমাজ। ওই সময় সমাবেশে দাবি ছিল ৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘণ্টা বিনোদন। চারিদিকে এই দাবির প্রতি জোরালো সমর্থন বাড়তে থাকে।

জানাযায়, ১৮০০ সালের সমাবেশে প্রায় ৫ লক্ষ লোক জড়ো হয়। সেদিন পুলিশ গুলি চালালে বেশকিছু শ্রমিক হতাহত হয়। ৩ মে ম্যাক কর্মিক হারভেস্টার কারখানায় পুলিশ হামলা চালালে ৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারায়। এভাবে দিনে দিনে কর্মসূচি চলতে থাকে।
এরপর ৪ মে হে মার্কেটের স্কয়ারে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে শ্রমিকরা। বেশকিছু শ্রমিক পুলিশের গুলিতে হতাহত হয়। সমাবেশ থেকে ৪ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। সরকারের বিচারে গ্রেফতাকৃত শ্রমিকদের ফাঁসির আদেশ হয়। এর প্রতিবাদে আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের শ্রমিকরা ফুঁসে ওঠে।

১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই সম্মেলনেও শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে আলোচনা হয়। এটি ছিল ফরাসী বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তি। শ্রমিকরা সেই আন্দোলনে তাদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়। শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ে ‘ট্রেড ইউনিয়ন’ গঠন করলেও সেই দাবি ঠিক তেমন জোরালো হচ্ছিল না।
এর ধারাবাহিকতায় ১৯০৪ খ্রি. আমস্টারডাম শহরে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ উপলক্ষে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। ঐ প্রস্তাবে বিশ্বজুড়ে সব শ্রমিক সংগঠন ১ মে বাধ্যতামূলকভাবে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে দিনটি মে দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
মে দিবসের আন্দোলন মানেই হচ্ছে শ্রমজীবী আন্দোলন। শ্রমজীবী মানুষের সম্মিলিত সংগঠন যা তাদের ভাগ করা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে পারে।

বাংলার শ্রমিক আন্দোলনের নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয় আব্দুল মোমিনকে। তার জন্ম ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর এবং মৃত্যু ১৯৮৩ সালে। ভারতীয় শ্রমিক আন্দোলনের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয় বাল গঙ্গাধর তিলক এবং লালা রাজনাথ রায়ের নেতৃত্বে। সে সময় গঠিত হয়েছিল ‘সর্ব ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন’। এই সংগঠন ভারতের শ্রমিক সমাজকে সর্বক্ষেত্রে সংগঠিত করেছিল। বাংলাদেশেও অনুরূপ শ্রমিক সংগঠন তৈরি হয়েছে। তবে তা হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজস্ব মতধারায় শ্রমিকদের ব্যবহার করেছে। ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন তাই নিজস্ব ধারায় সামনে এগিয়ে যেতে পারেনি। যার ফলে শ্রমিকরা রয়েগেছে সমস্যার আড়ালে। প্রতি বছর তাই মে দিবস আসে এবং চলেও যায়। কিন্তু তা বাস্তবে কোন ভূমিকা পালন করতে পারে না।
১৮৮৬ সালে যে আদর্শকে সামনে রেখে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেছিল আজও তা বাস্তবে রূপ লাভ করতে পারেনি। আমরা শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের পক্ষে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স